top of page
Writer's picturewww.sindhuk.com

পুরনো ও নতুন আয়কর কাঠামো: বাজেট ২০২৫

পুরনো ও নতুন আয়কর কাঠামো: বাজেট ২০২৫


ভারতে বর্তমানে দুটি আয়কর কাঠামো রয়েছে: পুরনো এবং নতুন। পুরনো কাঠামোতে করের হার তুলনামূলক বেশি হলেও অনেক ধরনের ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়। অন্যদিকে, নতুন কাঠামোতে কম করের হার থাকলেও কোনও ছাড়ের সুবিধা নেই। বাজেট ২০২৫-এর প্রেক্ষাপটে এই দুটি কাঠামোর তুলনা এবং কেন পুরনো কাঠামো অধিকাংশ করদাতার জন্য উপকারী তা বিশদে আলোচনা করা যাক।


পুরনো এবং নতুন কর কাঠামোর বৈশিষ্ট্য


পুরনো কাঠামোতে করদাতারা বিভিন্ন ধরনের ছাড় পান। উদাহরণস্বরূপ, 80C ধারা অনুযায়ী PPF, ELSS, LIC-এ বিনিয়োগের মাধ্যমে ₹১.৫ লক্ষ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়। এছাড়া HRA (House Rent Allowance), স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম, এবং শিক্ষার ঋণের সুদেও ছাড়ের সুযোগ রয়েছে। এই কাঠামো মানুষকে সঞ্চয়ের দিকে উৎসাহিত করে এবং ভবিষ্যতের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।


অন্যদিকে, নতুন কাঠামোতে আয় অনুযায়ী করের হার কম রাখা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ₹৭ লক্ষ পর্যন্ত কোনও কর দিতে হয় না। তবে, এখানে কোনও ছাড় বা বিনিয়োগের সুবিধা নেই। এটি একটি সরলীকৃত কাঠামো, যা করদাতাদের জটিল হিসাবের হাত থেকে মুক্তি দেয়।


কেন পুরনো কাঠামো অধিকাংশ করদাতার জন্য উপকারী


১. সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি


পুরনো কাঠামো মানুষকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করে। যেমন PPF এবং ELSS-এর মতো বিনিয়োগ পরিকল্পনাগুলি কর ছাড়ের পাশাপাশি উচ্চ রিটার্ন দেয়। এতে করদাতারা তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য উদ্বুদ্ধ হন।


২. পরিবারকেন্দ্রিক আর্থিক পরিকল্পনা


পুরনো কাঠামোতে স্বাস্থ্য বিমা, জীবন বিমা এবং শিক্ষার ঋণের সুদে ছাড় পাওয়া যায়, যা একটি পরিবারকে আর্থিক সুরক্ষা দেয়। নতুন কাঠামোতে এই সুবিধাগুলি না থাকায় আর্থিক ঝুঁকি বেড়ে যায়।


৩. মধ্যবিত্তের জন্য উপকারী


মধ্যবিত্ত শ্রেণি, যারা বিভিন্ন ছাড়ের সুবিধা গ্রহণ করেন, তাদের জন্য পুরনো কাঠামো আরও বেশি উপযোগী। এই শ্রেণির মানুষের মাসিক ব্যয়ের চাপ কমাতে পুরনো কাঠামো সাহায্য করে।


৪. উচ্চ আয়ে করদাতাদের জন্য লাভজনক


যারা বার্ষিক ₹১৫ লক্ষ বা তার বেশি আয় করেন, তারা পুরনো কাঠামোয় বিভিন্ন ছাড় নিয়ে করের দায় কমাতে পারেন। এতে তারা বিনিয়োগের মাধ্যমে ভবিষ্যতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সক্ষম হন।


উদাহরণ বিশ্লেষণ


যদি কারও বার্ষিক আয় ₹৮ লক্ষ হয় এবং তিনি HRA, 80C, ও 80D-এর ছাড় গ্রহণ করেন, তবে পুরনো কাঠামোয় তার করের দায় ₹২৫,০০০ হতে পারে। কিন্তু নতুন কাঠামোয় কোনও ছাড় না থাকায় করের দায় দাঁড়াবে ₹৩৫,০০০। একইভাবে, ₹১৫ লক্ষ আয়ের ক্ষেত্রে পুরনো কাঠামোয় বিভিন্ন ছাড় গ্রহণের ফলে করের দায় প্রায় ₹১,২০,০০০ হতে পারে, যেখানে নতুন কাঠামোয় তা দাঁড়াবে ₹১,৫০,০০০


বাজেট ২০২৫-এর জন্য প্রত্যাশা


বাজেট ২০২৫-এ পুরনো কাঠামোর কয়েকটি উন্নতি প্রয়োজন। প্রথমত, 80C-এর অধীন ছাড়ের সীমা ₹১.৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ₹২ লক্ষ করা উচিত। স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে ছাড়ের সীমাও বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এছাড়া, মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপর চাপ কমাতে আয় ₹১০ লক্ষ পর্যন্ত করের হার কমানো প্রয়োজন।


পুরনো আয়কর কাঠামো করদাতাদের সঞ্চয় করতে এবং ভবিষ্যতের আর্থিক পরিকল্পনা করতে সাহায্য করে। নতুন কাঠামো সরলীকৃত হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি করদাতাদের আর্থিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বাজেট ২০২৫-এ পুরনো কাঠামো সংরক্ষণ এবং ছাড়ের সুযোগ আরও বাড়ানো উচিত।

Recent Posts

See All

বদলে যাচ্ছে সঞ্চয়ের ধরন: ব্যাঙ্ক থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন ভারতীয়রা?

বদলে যাচ্ছে সঞ্চয়ের ধরন: ব্যাঙ্ক থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন ভারতীয়রা? সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ ভারতীয়দের অর্থনৈতিক সংস্কৃতির মূল অংশ। যদিও ব্যাঙ্ক...

ETF Investing for Beginners

ETF কি? (What is ETF?) ETF-এর সংজ্ঞা ETF এর ইতিহাস ও উৎপত্তি শেয়ারের সাথে ETF এর পার্থক্য ETF কিভাবে কাজ করে ETF এর ধরন (Types of ETFs)...

bottom of page