OBC Certificate: যেসব সম্প্রদায় শিক্ষাগত এবং সামাজিকভাবে পিছিয়ে, তাদের ধরা হয় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি হিসেবে। তাদের উন্নয়নের জন্য সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষায় সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এই সংরক্ষণের সুবিধা যাতে এই শ্রেণিভুক্তের মানুষ পান, সেজন্য ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। মণ্ডল কমিশনের ১৯৮০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেইসময় দেশের ৫২ শতাংশ মানুষ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত ছিল। আবার ২০০৬ সালে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন হওয়ার পর সেই সংখ্যা কিছুটা কমে হয় ৪২ শতাংশ।
২০১০ সালের পর জারি হওয়া সমস্ত ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি ভুক্তদের সংরক্ষণের সুবিধা দিতে রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া শংসাপত্রই হল ওবিসি সার্টিফিকেট। ২০১০ সালের পর থেকে জারি হওয়া সব শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। যথাযথভাবে আইন মেনে শংসাপত্র বানানো হয়নি বলে জানিয়েছে আদালত। তবে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, ইতিমধ্যে এই শংসাপত্র ব্যবহার করে যাঁরা সংরক্ষণের সুবিধা পেয়েছেন, এই নির্দেশে তাঁদের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। এই শংসাপত্র ব্যবহার করে যাঁরা চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন, তাঁদেরও চিন্তার কোনও কারণ নেই। তবে নতুন করে আর কেউ এই শংসাপত্র চাকরিপ্রক্রিয়ায় ব্যবহার করতে পারবেন না। হাইকোর্টের নির্দেশের পর রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেনে নেওয়া যাক, কারা পান ওবিসি শংসাপত্র? এই শংসাপত্র থাকলে কী কী সুবিধা পাওয়া যায়?
অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি কী?
যেসব সম্প্রদায় শিক্ষাগত এবং সামাজিকভাবে পিছিয়ে, তাদের ধরা হয় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি হিসেবে। তাদের উন্নয়নের জন্য সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষায় সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এই সংরক্ষণের সুবিধা যাতে এই শ্রেণিভুক্তের মানুষ পান, সেজন্য ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া হয়। মণ্ডল কমিশনের ১৯৮০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেইসময় দেশের ৫২ শতাংশ মানুষ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত ছিল। আবার ২০০৬ সালে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন হওয়ার পর সেই সংখ্যা কিছুটা কমে হয় ৪২ শতাংশ। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্তরা সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষায় সংরক্ষণের সুবিধা পান। সামাজিক অবস্থান, শিক্ষা এবং আর্থিক অবস্থান বিবেচনা করে কোনও সম্প্রদায়কে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত করা হয় কিংবা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এই তালিকা নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক।
পশ্চিমবঙ্গে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত কারা?
পশ্চিমবঙ্গে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় ১৭৯টি সম্প্রদায় রয়েছে। আর এই তালিকাকে দুটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করা হয়েছে। ক্যাটেগরি-এ এবং ক্যাটেগরি-বি। ক্যাটেগরি-এ হল অতিরিক্ত অনগ্রসর। আর ক্যাটেগরি-বি হল অনগ্রসর।
ক্যাটেগরি-এ’তে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৮১টি জাতি। যার মধ্যে ৭৩টি জাতি মুসলিম। তার মধ্যে বৈদ্য মুসলিম, ব্যাপারী মুসলিম, মুসলিম ছুতোর মিস্ত্রি, মুসলিম দফাদার, গায়েন মুসলিম, মুসলিম জমাদার, মুসলিম কালান্দার, কসাই, মাঝি (মুসলিম), খানসামার মতো জাতিভুক্তরা রয়েছে।
ক্যাটেগরি-বি’তে ৯৮টি জাতির মধ্যে ৪৫টি মুসলিম। ক্যাটেগরি-বি’তে রয়েছে বৈশ্য কাপালি, বংশী বর্মণ, বারুজীবী, চিত্রকর, দেওয়ান, কর্মকার, কুর্মি, মালাকার, ময়রা, গোয়ালা, তেলির মতো জাতিভুক্তরা।
কী সুবিধা পাওয়া যায় ওবিসি শ্রেণিভুক্ত হলে?
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। তার মধ্যে ক্যাটেগরি-এ শ্রেণিভুক্তরা ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা পান। আর ক্যাটেগরি-বি শ্রেণিভুক্তরা ৭ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা পান।
একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্যকে জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন ওবিসি-দের সংরক্ষণ বাড়িয়ে ২২ শতাংশ করার সুপারিশ করেছিল। তবে রাজ্য সরকার এই নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।