top of page

Lok Sabha Election 2024: বঙ্গে তৃণমূল না বিজেপি, কার ঝুলিতে বেশি আসন? ভবিষ্যদ্বাণী কি ? INDIA VS NDA

লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। প্রচারে কোনও খামতি নেই। সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। বিজেপির অন্যতম টার্গেট বাংলা। বাংলায় কে বেশি আসন পাবে? সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্য়মকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভালো ফলের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। ঠিক কী বলেছেন প্রশান্ত কিশোর? ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের মধ্য়ে তৃণমূল ২২টি, বিজেপি ১৮টি ও কংগ্রেস দু'টি আসনে জয়লাভ করেছিল।


ভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর কথার দাম রয়েছে। তাঁর কথায় বিশ্বাস করে আমজনতা। কারণ অতীতে ফিরে থাকালে তাঁর এমন বহু ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে যা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর। তিনি হলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। প্রচারে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। বিজেপির নজরে এবারও বাংলা। ইতিমধ্য়েই চারবার রাজ্য সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কর্মীদের ভোকাল টনিক থেকে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা, নিজেদের কাজের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি রাজ্য়ের শাসক দলকে আক্রমণ 'ওয়ান লাইন'-বরাবরই ক্রস করেছেন। তবে গেরুয়া শিবিরের দাবি, প্রচারকে অবশ্য পাত্তা দিতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল। জোরকদমে প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসও। লোকসভা ভোটে বাংলার ফলাফল কী হবে? কী মনে করেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর?


বাংলায় বিজেপি ঝড়ের অনুমান ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের। এক সংবাদ সংস্থার সঙ্গে কথা বলার সময় প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে আশ্চর্যজনক ভাবে তৃণমূলের উপরে বড় লিড পেতে পারে বিজেপি। আমার অনুমান বিজেপি বাংলায় তৃণমূলের থেকে সব দিক থেকে ভালো পারফর্ম করতে পারে। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় অবাক করা ফলাফল দেখতে প্রস্তুত থাকুন যা বিজেপির পক্ষে যাবে। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ভারতীয় জনতা পার্টি বাংলার একক বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। এতে কারও মনে হতেই পারে বা কেউ বলতেই পারে আমি বিজেপির এজেন্ট।'


প্রশ্ন উঠতেই পারে কীসের ভিত্তিতে এমনটা দাবি করেছেন প্রশান্ত কিশোর? আদৌত কি এটা সম্ভব?


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে বিজেপির অবস্থা ভালো ছিল না বাংলায়। বিধানসভা নির্বাচন হোক বা পঞ্চায়েত নির্বাচন সব ক্ষেত্রেই মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। উপনির্বাচনেও বিজেপিকে হারিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির একাধিক বর্ষীয়ান নেতা এমন কি একাধিক মন্ত্রীও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তাহলে কোথা থেকে বঙ্গে বিজেপির বেশি সিট পাওয়ায় আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর? পিছনে কী কী যুক্তি দিলেন তিনি?



মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে ব্যক্তিগতভাবে এখনও পর্যন্ত আক্রমণ করেননি মোদী


প্রশান্ত কিশোরের মতে, গত বিধানসভা নির্বাচনে ইতিহাস তৈরির দোরগোরায় এসে গো-হারান হেরে যায় গেরুয়া শিবির। তার পিছনে মূল কারণ ছিল মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ব্যক্তিগত ভাবে মোদীর কটাক্ষ করা। শেষ মুহূর্তের জয়ের সমীকরণ সেই কারণেই পাল্টে যায়। মমতার উদ্দেশ্যে মোদীর দিদি ও দিদি সম্বোধন ভালো ভাবে নেয়নি বাংলার মহিলারা। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই তৃণমূল এটিকে বিজেপি মা, মাটি মানুষের অবমাননার বিষয় করে তোলে। তবে এই কৌশল এবার বদলেছে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত এরকম ভাবে মমতাকে আক্রমণ করেননি মোদী। সবকিছুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে তৃণমূলকে।'


অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠানো


রাজবংশী সম্প্রদায় থেকে এসেছেন অনন্ত রায়। মতুয়ার পরে এটি বঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম তফসিলি জাতি (SC) সম্প্রদায়। অনন্ত রাইকে প্রার্থী করে বিজেপি উত্তরবঙ্গে খুঁটি আরও পোক্ত করবে। কারণ সেখানে রাজবংশী সম্প্রদায়ের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। রাজবংশী উত্তরবঙ্গের আটটি লোকসভা আসনের মধ্যে চারটিতে জয়ী হয়েছে। ২০১৯ সালে বিজেপি এই আসনগুলির মধ্যে সাতটিতে জয় পেয়েছিল। আশা করা হচ্ছে বিজেপি এবার আটটি আসন জিততে সক্ষম হবে।


কংগ্রেস-সিপিএম ও তৃণমূলের পৃথক লড়াই


প্রশান্ত কিশোরের মতে, রাজ্যের ক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তৃণমূল একলা লড়াই করছে। অর্থাৎ রাজ্য়ে কংগ্রেস-সিপিএম-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়াই করছে না তৃণমূল। এই বিষয়টি বিরোধী দল বিজেপিকে আরও শক্তি জুগিয়েছে। এছাড়া ভোট বণ্টনের সুবিধাও পেতে পারে বিজেপি।


সিএএ


সিএএ কার্যকর হওয়ার খুশি বাংলার মতুয়া সম্প্রদায়। বাংলায় আনুমানিক এক কোটি আশি লাখ মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছে। যে কোনও দলের খেলা ঘুরিয়ে দেওয়া ক্ষমতা রয়েছে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক।


সন্দেশখালিকাণ্ড প্রভাব পড়তে পারে


ভোটের আগে রাজ্যে যতবারই সফরে এসেছেন মোদী ততবারই তাঁর কণ্ঠে শোনা গিয়েছে সন্দেশখালি প্রসঙ্গে। তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণও শানিয়েছেন। ভোটের এই সন্দেশখালিকাণ্ড প্রভাব ফেলবে বলে মত পিকের।


হিন্দু ভোটারদের একত্রিক করার প্রচেষ্টায় বিজেপি লাভবান হতে পারে


হিন্দু ভোট ব্য়াঙ্ককে নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া বিজেপি। রাজ্যের হিন্দু জনসংখ্য়া মোট জনসংখ্য়ার ৭১ শতাংশ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ হয়েছিল ব্য়াপক ভাবে। একাধিক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৫৫ শতাংশ হিন্দু ভোট বিজেপির পক্ষে গিয়েচিল। সম্ভবত সেই সব কারণেই বিজেপি শুধুমাত্র আবেগের বিষয়গুলিতে শান দিচ্ছে।


তফসিলি জাতি বিজেপির পক্ষে একত্রিত হতে পারে


হিন্দুদের মধ্যে তফসিলি জাতি রাজবংশী, মতুয়া যাঁরা রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ২৩ শতাংশ তাঁরা এবার বৃহত্তর পরিসরে বিজেপির পক্ষে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৯ সালেও বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন চা শ্রমিক, জঙ্গলমহলের আদিবাসীরাও। মনে করা হচ্ছে সিএএ-এর অধীনে মতুয়া ও রাজবংশীদের সুবিধাগুলি অন্যান্য তফসিলি জাতিদের উপর মানসিক ভাবে প্রভাব বিস্তার করবে। অপ্রতিরোধ্যভাবে SC ভোটগুলি বিজেপির পক্ষে হবে বলে আশা।

bottom of page