১০০ টাকা দিয়ে আজ যা যা জিনিস কেনা যায়, ভবিষ্যতে যাবে না। অর্থাৎ ১০০ টাকার মান কমবে। আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টাকার ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পায়। এটাকেই মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়। সহজ কথায়, পণ্য এবং পরিষেবার দাম ভবিষ্যতে বাড়বে। এবং টাকার মান কমবে।
এই কারণেই বিনিয়োগ করার সময় মুদ্রাস্ফীতিকে ফ্যাক্টর ধরা হয়। দেখতে হয়, বিনিয়োগের রিটার্ন যেন মূল্যস্ফীতিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবেই লাভ হবে। মুদ্রাস্ফিতি-সামঞ্জস্যপূর্ণ আয় সর্বাধিক করতে হবে। বিনিয়োগের পরিভাষায় এটাকে বলে ‘থাম্ব রুল’।
রিটার্ন মুদ্রাস্ফীতিকে হারাতে পারবে কি না, ইনফ্লেশন ক্যালকুলেটর থেকে তা সহজেই বোঝা যায়। পাশাপাশি বোঝা যায় টাকার মান। যেমন আজকের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে যা যা কেনা যায়, ২০ বছর পর সেই জিনিসগুলো কিনতে কত টাকা খরচ করতে হবে।
মুদ্রাস্ফীতি প্রাথমিকভাবে টাকার ক্রয় ক্ষমতার পতনকে নির্দেশ করে। মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপের ২টি সূচক রয়েছে – কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স এবং হোলসেল প্রাইস ইনডেক্স। হোলসেল মূল্য সূচকে পাইকারি স্তরের পরিবর্তন গণনা করা হয়। কনজিউমার মূল্য সচকে খুচরো পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
বর্তমানে ভারতে মুদ্রাস্ফীতির হার ৫.০৯ শতাংশ। তাহলে আজকের ৫০ হাজার টাকা ২০ বছর পর কত দাঁড়াবে? ইনফ্লেশন ক্যালকুলেটররের হিসেব অনুযায়ী, আজ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে যা যা কেনা যায়, ২০ বছর পর সেগুলো কিনতে ১,৫৭,৩৫৮ টাকা খরচ করতে হবে। অর্থাৎ ১,০৭,৩৫৮ টাকা খরচ বাড়বে। অর্থাৎ দ্বিগুণেরো বেশি টাকা খরচ করতে হবে।
ভবিষ্যতের আর্থিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার উদ্দেশ্যেই বিনিয়োগ করা হয়। এখন যদি মুদ্রাস্ফীতি রিটার্ন খেয়ে ফেলে তাহলে লোকসান। কারণ ভবিষ্যতে ক্রয় করার ক্ষমতাই থাকছে না বিনিয়োগকারীর। সেই জন্যই আর্থিক বিশেষজ্ঞরা এমন জায়গায় বিনিয়োগের পরামর্শ দেন, যেখানে রিটার্ন মুদ্রাস্ফীতিতে হারাতে পারে।
যেমন স্টক এবং মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ। গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে, এই ধরনের বিনিয়োগ থেকে আয় মুদ্রাস্ফীতির হারের চেয়ে বেশি হয়েছে। তবে এই ধরনের বিনিয়োগে ঝুঁকিও রয়েছে।