যারা অল্প আয় করেন বা নির্দিষ্ট বেতনের চাকরি করে থাকেন তাঁদের মধ্যে আয়কর নিয়ে এতদিন সেভাবে চিন্তা ছিল না। কারণ করযোগ্য আয় হলেও বছরের শেষে একটা ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করে দিলেই ঝামেলা মিটে যেত। এতদিন ধারণা ছিল, আয়কর দফতরের নোটিশ শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের জন্য, চাকুরীজীবীদের ওই নিয়ে চিন্তাভাবনার কিছু নেই।
কিন্তু গত কয়েক বছরের ধারণাটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে আয়কর দফতর সাধারণ মানুষ, চাকরিজীবী সবাইকেই নোটিশ পাঠাচ্ছে। এর কারণ আর কিছু নয়, আপনি অন্যায়ভাবে রোজগার না করলেও ইনকাম ট্যাক্সের নোটিশ পেতে পারেন। তার কারণ নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কিছু ভুল পদক্ষেপ।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যান্ডেলিং-এর বিষয়টি একেবারে সহজ কিছু নয়। এর বেশ কিছু নিয়ম আছে। বিশেষ করে টাকা তোলার উর্ধ্বসীমা, টাকা জমা দেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা সংক্রান্ত নিয়মগুলি ভালোভাবে জেনে রাখা দরকার। না হলে নিয়ম ভাঙার কারণে আপনার কাছে এসে হাজির হতে পারে ইনকাম ট্যাক্সের নোটিশ।
এক্ষেত্রে বিপদ হল, দ্রুত জরুরি পদক্ষেপ না নিলে আয়কর বিভাগকে মোটা টাকা জরিমানা দিতে হতে পারে, এমনকি হাজতবাস পর্যন্ত করতে হতে পারে। তাই আজকের প্রতিবেদনে ব্যাঙ্কের টাকা জমা ও তোলা সংক্রান্ত কোন চারটি ভুলের জন্য আপনি আয়কর দফতরের নোটিশ পেতে পারেন তা তুলে ধরা হল।
এই চারটি ভুলে পেতে পারেন ইনকাম ট্যাক্সের নোটিশ
১) যতই দরকার থাকুক নিজের সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে এক ধাপে ১০ লক্ষ টাকার বেশি টাকা কখনও তুলবেন না। এই নিয়ম না মানলেই আপনাকে নোটিশ পাঠাবে আয়কর দফতর। এক্ষেত্রে যদি আপনার ১০ লক্ষ টাকার বেশি অর্থ তোলার প্রয়োজন হয় তবে দুটি বা তিনটি ধাপে সেই টাকা তুলুন।
২) বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একসঙ্গে ৩০ লক্ষের বেশি টাকা জমা করবেন না। এই ভুলটা করলেই আপনার আয়ের উৎস জানতে চেয়ে বড়সড় নোটিশ ধরাবে ইনকাম ট্যাক্স। তখন তার উত্তর দিতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হতে পারে। তাই একান্তই যদি বেশি টাকা জমা করার দরকার হয় সেক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপে ভেঙে টাকা জমা দিন।
৩) ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটার পাশাপাশি ক্যাশ লোনও নেওয়া যায়। কিন্তু সেই লোনের পরিমাণ কখনই ১ লক্ষ টাকার বেশি করবেন না। সেক্ষেত্রে নোটিশ ধরাতে পারে আয়কর বিভাগ।
৪) ক্রেডিট কার্ডের বিল নগদে জমা দেওয়া আয়কর আইনের পরিপন্থী। তাই ক্রেডিট কার্ডের বিল অনলাইনে বা ডিজিটালি জমা করার চেষ্টা করুন। সেটা না করতে পারলে আপনার কাছে আসতেই পারে আয়কর বিভাগের নোটিশ।
তবে আয়কর বিভাগের নোটিশ নিয়েও আজকাল জালিয়াতি চলছে। তাই সত্যিই সেটা ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট আপনাকে পাঠিয়েছে কিনা তা যাচাই করার জন্য একজন চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের সঙ্গে কথা বলুন। যদি সত্যিই আয়কর বিভাগের নোটিশ পেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ভয় না পেয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সেই নোটিসের উত্তর দিন। প্রয়োজনে নিজের আয়ের উৎস ভাল করে আয়কর অফিসারদের কাছে তুলে ধরুন।